মামলা ছাড়াই বিকল্প পন্থায় রাঙামাটি লিগ্যাল এইড জেলা অফিস গত দু’দিনে ৭টি বিরোধ আপোষে মীমাংসা করতে সক্ষম হয়েছে। রাঙামাটি লিগ্যাল এইড অফিসা সূত্র জানিয়েছে, মামলা ছাড়াই বিকল্প পন্থায় গত দু’দিনে নিষ্পত্তিকৃত বিষয় ৭টি। বিষয়গুলোর মধ্যে কাউখালী উপজেলার এক কিশোরীর মা-বাবার বিচ্ছেদ ঠেকানোর আকুতি উপস্থিত সকলকেই কাঁদিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে পরকীয়ার জড়িত বাবাকে ঘরে ফেরাতে এসএসসি পড়ুয়া কিশোরী রীতিমতো যুদ্ধে নেমেছিলো। আর সেই যুদ্ধে ত্রাতার ভুমিকা গ্রহন করেছে রাঙামাটি জেলা লিগ্যাল এইড’র অফিসার।
সূত্র মতে, সোমবার (১৮ জানুয়ারী) নিষ্পত্তিকৃত বিষয়ের প্রথমটি দুজন সরকারি চাকুরে একে অপরের কাছ থেকে অনৈতিক পন্থায় চাকরী পাইয়ে দেবার নামে ১১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার মতো গুরুতর অপরাধ। যা দীর্ঘ ৩ বছর পরে সমাধানে এলো। দ্বিতীয়টি সনাতন ধর্মাবলম্বী এক দম্পতির আপোষ বিচ্ছেদ। তৃতীয়টি দু’স্ত্রীকে সমানভাবে খোরপোষ দেয়ার বিষয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরকীয়ায় আসক্ত পিতাকে মায়ের কাছে ফেরানোর আবেদন ছিলো। যা দীর্ঘ সময় কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে স্বামী-স্ত্রী একত্রে বসবাসে সম্মত করিয়ে ঘরে পাঠানো হয়েছে। মীমাংসা বৈঠক চলাকালে এসএসসি পড়ুয়া কিশোরীর কান্নায় আদালত চত্ত্বরের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
এদিকে বুধবার বিয়ে পাগল ও যৌতুকলোভী স্বামীর বিরুদ্ধে অসহায় এক নারী ভিকটিমকে সরকারি খরচে আইনী সহায়তা ও ফৌজদারী মামলার সীদ্ধান্ত। কক্সবাজারে চাকরিকালে রাঙামাটির আরেকজন উপজাতি তরুণী স্থানীয় বৌদ্ধ বিহারে বিয়ে করে। দু’মাস সংসার করে তার স্বামী লাপাত্তা হয়ে যায়। প্রতারিত সেই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারককে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। অপর মহিলা নেশাগ্রস্থ ছেলের হারে প্রহৃত হয়ে প্রতিকার চাইলে, রাঙামাটি জেলা লিগ্যাল এইড’র কাউন্সিলিং করে শর্ত স্বাপেক্ষে মা-ছেলেকে মিলিয়ে দেয়।
হরেকরকম অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন রাঙামাটি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে প্রতিকার প্রত্যাশায় হাজির হচ্ছে মানুষ। কারোর মীমাংসা হয় আবার করো অভিযোগ মামলায় গড়ায়। টাকার অভাব হলেও সরকারের এ উদ্যোগের ফলে কেউ বিচার বঞ্চিত হচ্ছে না।
এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জর্জ মোঃ জুনাইদ বলেন, বৈরীতার চেয়ে মীমাংসা শ্রেয়। আমরা আন্তরিকভাবে মানুষের কষ্ট লাগবে কাজ করে যাচ্ছি। করোনাকালেও আমাদের সেবা চালু রয়েছে।